জামালপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটালে স্বাগতম

কলেজ ইতিহাস


জামালপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটালের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম ডা. মির্জা ওবায়দুল্লাহ ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ, ঢাকা হতে ডি.এইচ.এম. এস. কোর্স সম্পন্ন করে জামালপুর জেলা শহরে চিকিৎসক হিসেবে আত্মনিয়োগ করেন। তিনি মানুষের সেবা দানের পাশাপাশি শহরের বুকে একটি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল স্থাপনের চিন্তা করেন। অনেকের নিকট পরামর্শ করে সন্তোষজনক সাড়া না পাওয়ায় পরবর্তী সময়ে তিনি আলহাজ ডা. মো. আব্দুল জলিল সাহেবকে সঙ্গে নিয়ে ১৯৯২ সনে কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রথম যাত্রা শুরু করেন।

পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক মরহুম জনাব এস. এম. ইউসুব আলী সাহেবের পরামর্শে কলেজের অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে সিংহজানী বহুমূখী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে কাযক্রম শুরু করা হয়। তিনি শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সময়ে সময়ে আলোচনায় বসতেন। তদানিন্তন জামালপুর জেলার জেলা প্রশাসক জালাল আহমেদ কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবে সম্মতি জ্ঞাপন করেন এবং মরহুম ডা. মির্জা ওবায়দুল্লাহকে অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়ে একটি কলেজ পরিচালনা কমিটি গঠন করেন।

অনেক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও দীর্ঘ দিন এই কলেজ শিক্ষা দানের ক্ষেত্রে স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে অতিবাহিত হতে থাকে। আমি তখন এই প্রতিষ্ঠানের ডি. এইচ. এম. এস. প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলাম। আমি লক্ষ করেছি কলেজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ডা. মিজা ওবায়দুল্লাহ যাদের নিয়ে পদযাত্রা শুরু করেছিলেন, তাদের মধ্যে অনেকেই নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছেন, তবুও তিনি উদ্যম হারান নি। তার প্রচেষ্টায় একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ডা. এম.এ. জলিল, ডা. আবু তাহের, মো. রুহুল আমিন, ডা. রুহুল আমিন সরকার, মরহুম ডা. আব্দুর রহিম গুন, মরহুম ডা. খন্দকার মাসুদুর রহমান, মরহুম ডা. খন্দকার এনামুল হক, ডা. খন্দকার মিজানুর রহমান, ডা. সৈয়দ আশরাফ আলী, মরহুম ডা. আবু তাহের বকুল, ডা. জহুরুল ইসলাম, মরহুম এডভোকেট ডা. নওয়াব আলী মোল্লা তাদেরকে বিনা বেতনে ছাত্র-ছাত্রীদের নৈশকালে পাঠদান করতে দেখা গিয়েছে। সেই সঙ্গে হাসপাতালের বহির্বিভাগ পরিচালনার জন্য মেডিকেল অফিসার ডা. মীর আব্দুল হালিম, কম্পাউন্ডার হিসেবে ডা. খন্দকার মনছুর আলী ও ডা. আব্দুস সাত্তার এবং হিসাব রক্ষণের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মির্জা আহসান হাবিব, লাইব্রেরী পরিচালনার জন্য মির্জা নাজমা বেগম এবং মরহুম জনাব কফিল উদ্দিন লাইব্রেরীর এককালীন ১০,৫০০/= টাকার বই দান করেন, রাত্রিকালীন নৈশ পাহারায় থাকতেন আব্দুল হক। এর ফলস্রুতিতে দিনের পর দিন কলেজের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব বাড়তে থাকে।

কলেজ সরকারি স্বীকৃতি বাস্তবায়ন করতে হলে ভূমি, ভবন ও ব্যাংক ডিপোজিট থাকা অপরিহার্য। তিনি এ বিষয়ে সহযোগিতার জন্য বিভিন্ন জনের দ্বারস্ত হয়েছেন।কিন্তু  সন্তোষজনক সাড়া নো পেয়ে প্রতিষ্ঠাতা সাহেব তার মাতার নিকট হতে রেজিস্ট্রিকৃত হেবা দলিল মূলে প্রাপ্ত একখন্ড ভূমি হতে ১ একর ৫০ শতাংশ কলেজ বরাবর দান করেন। পরবর্তী সময়ে এই প্রতিষ্ঠানের দাতা সদস্য আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম ৫০ শতাংশ ভূমি কলেজ বরাবর দান করেন। যার উপর কলেজ গেইট ও চলাচলের রাস্তা বিদ্যমান। প্রতিষ্ঠাতা সেই সঙ্গে কলেজ ভবন নির্মাণের জন্য নগদ ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা দান করেন। সরকারি অর্থায়ন ও দানশীল ব্যক্তিদের আর্থিক সহযোগিতাও পাওয়া যায়, তন্মেধ্য আলহাজ্ব হাসান মাহমুদ রাজার নাম উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে একডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন ও বহির্বিভাগ ভবন উল্লেখিত ভূমির উপর দন্ডায়মান। কলেজ স্বীকৃতির বিষয়ে তদানীন্তন স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী সিরাজুল হক ও পরবর্তী সময়ে ভূমিমন্ত্রী  রাশেদ মোশারফ সাহেবের অবদান প্রণিধানযোগ্য। এছাড়াও বোর্ডের মাননীয় চেয়ারম্যান হোমিও রত্ন ডা. দীলিপ কুমার রায়, ডা. শাখাওয়াত হোসেন খোকন সাবেক বোর্ড সদস্যের সহযোগীতাও অনস্বীকার্য। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল তথা জামালপুর জেলার ছেলেমেয়েদের বেকারত্ব দূরীকরণ, দুঃস্থ ও রুগ্ন মানুষের সেবা পাওয়ার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। আমি প্রতিষ্ঠাতা সাহেবের এবং কলেজের সহিত সংশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, এছাড়াও অনেক হোমিও ডাক্তারগণ ও হোমিও অনুরাগীবৃন্ধ ইতিমধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং যারা জীবিত আছেন তাদের দীর্ঘায়ু, সুস্থতা ও শান্তি কামনা করছি।

ডা. মো. জাকির হোসেন

সহকারি অধ্যাপক

জামালপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল

জামালপুর সদর

© সংরক্ষিত ২০২৪

কারিগরি সহায়তা: Sajjad Hossen